আত্মকর্মসংস্থান কি
প্রাকৃতিক ভাবে নতুন চুল গজানোর উপাই
মূলত আত্মকর্মসংস্থান হচ্ছে কোন ব্যক্তির নিজস্ব উদ্যোগে অর্থ উপার্জনের
প্রক্রিয়া বা ব্যবস্থা। এটি যে কোন ধরনের পেশা হতে পারে যথা ব্যবসায়ী এবং
ফ্রিল্যান্সিং অথবা স্বতন্ত্র যেকোন পেশা ইত্যাদি।
পেজ সূচিপত্র: আত্মকর্মসংস্থান
পরিকল্পনা অথবা কৌশল নির্ধারণ
সফলভাবে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ এবং কৌশল অত্যন্ত জরুরী নিম্নে
তা দেওয়া হল:
পরিকল্পনা:
১. লক্ষ্য নির্ধারণ: কোন বিষয়ে বা কোন খাতে কাজ করতে চান সেটি নির্ধারণ করতে হবে
যেমন কৃষি কাজ প্রযুক্তি ফ্রিল্যান্সিং ই-কমার্স ইত্যাদি প্রভৃতি বিশেষ।
২. বাজার গবেষণা: বাজার গবেষণা করুন এবং জানুন উক্ত বাজারে পণ্য বা সেবার চাহিদা
কেমন বা কোন পণ্য বেশি চাহিদা সম্পন্ন।
৩. ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা: কত টাকা খরচ করবেন কিভাবে আয় করবেন এবং লাভের
সম্ভাবনা কেমন হবে তা পরিকল্পনা করুন।
৪. প্রারম্ভিক মূলধন সংগ্রহ: বিভিন্ন ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারি অনুদান
থেকে অর্থ সংগ্রহ করুন।
৫. আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন: ব্যবসায় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু আইনি
প্রক্রিয়া যথা-ব্যবসার লাইসেন্স কর ব্যবস্থা ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি নিশ্চিত করা
প্রয়োজন।
কৌশল:
১. ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার: যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুক ইউটিউব ইনস্টাগ্রাম এবং
বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রচার করুন।
২. মানসম্পন্ন সেবা বা পণ্য: ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য মানসম্পন্ন পণ্য নিশ্চিত
করুন।
৩. নেটওয়ার্ক তৈরি: বিভিন্ন ধরনের উদ্যোক্তা তথা বিনিয়োগকারী এবং সরবরাহকারীদের
সাথে নেটওয়ার্ক বা যোগাযোগ বাড়ান।
৪. ধৈর্য এবং উন্নয়ন: বাজার পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে
দক্ষতা গড়ে তুলুন।
পুঁজি এবং বিনিয়োগ ব্যবস্থা
আত্ম কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় উপাদান হলো পুঁজি বা মুনাফা। নিচে পুঁজি এবং
বিনিয়োগ ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
পুঁজি সংগ্রহ:
১. নিজস্ব সঞ্চয়: আত্মকর্মসংস্থানে একজন ব্যক্তির আত্মনির্ভরশীল হতে হলে তার
নিজের সঞ্চিত অর্থ সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। এক্ষেত্রে যেমন ঝুঁকি কম আবার ঋণের চাপও
থাকে না।
২. পরিবার বা বন্ধুদের সহায়তা: সাধারণত পরিবার এবং নিজের বন্ধুদের থেকে বিনিয়োগ
সহায়তা নিতে পারেন এ থেকে সুদ ছাড়া সহজ শর্তে অর্থ পাওয়া যায়।
৩. ব্যাঙ্ক ঋণ ও সরকারি অনুদান:
ব্যাংক ঋণ: বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং সরকারি ব্যাংক এছাড়াও SME(Small
and Medium Enterprise) উদ্যোক্তাদের কৃষি লোন এবং উদ্যোক্তা ঋণ ইত্যাদি দিয়ে
থাকেন।
সরকারি অনুদান: সরকারি বিভিন্ন সংস্থা উদ্যোক্তাদের বিনা সুদ বা স্বল্প সুদে ঋণ
দেয় যথা-যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ক্ষুদ্র, ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন ইত্যাদি।
বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা:
১. বাজেট পরিকল্পনা: এক্ষেত্রে কোন কোন খাতে বা ব্যবসায়ী ব্যয় করবেন এবং কত
টাকা বিনিয়োগ করবেন তা পরিকল্পনা করুন মনে রাখতে হবে অপচয় এড়িয়ে লাভজনক খাতে
ব্যয় করতে হবে।
২. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ব্যবসায়িক ঝুঁকি কমানোর জন্য সঞ্চয় একটি গুরুত্বপূর্ণ
তহবিল এক্ষেত্রে শুধুমাত্র পরীক্ষিত এবং লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করুন।
৩. মুনাফা পুনঃবিনিয়োগ: এক্ষেত্রে ব্যবসার সব মুনাফা তুলে না রেখে ব্যবসায়
সম্প্রসারণের জন্য ব্যবহার করুন।
৪. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার: ব্যবসায় নতুন প্রযুক্তি সংযোজনের ফলে যেমন খরচ কম
হয় তেমনি লাভ হয়।
৫. আইনি ও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ: এক্ষেত্রে ব্যবসার সকল আর্থিক লেনদেন সঠিকভাবে
লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজ সমূহ যথা লাইসেন্স, ট্যাক্স ইত্যাদি
সম্পন্ন রাখুন।
দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ
প্রথমত আত্মকর্মসংস্থান বলতে আমরা যেটা বুঝি সেটা হল নিজের উদ্যোগে কর্মসংস্থানের
সৃষ্টি করা যেমন ব্যবসা করা ফ্রিল্যান্সিং কৃষিকাজ বা অন্য যেকোনো স্বাধীন পেশা।
সফলভাবে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ অধিক যথার্থ নিচে তা দেওয়া
হলো:
প্রয়োজনীয় দক্ষতা:
১. উদ্যোক্তা মানসিকতা: একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যই নতুন কিছু করার সাহস এবং
পরিকল্পনা থাকতে হবে।
২. ব্যবসায়িক জ্ঞান: ব্যবসায়ের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে যথা
বাজার বিশ্লেষণ প্রতিযোগিতা এবং লাভজনক কৌশল ইত্যাদি বিশেষ।
৩. অর্থ ব্যবস্থাপনা: এক্ষেত্রে ব্যয়ের হিসাব ছাড়াও বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং
বাজেট তৈরি হিসাব রাখতে হবে।
৪. যোগাযোগ দক্ষতা: ব্যবসায়ী পার্টনার এবং কাস্টমার ও বিনিয়োগকারীদের সাথে
যথাসময়ে যোগাযোগ রাখা।
৫. প্রযুক্তিগত দক্ষতা: ই কমার্স অথবা ডিজিটাল মার্কেটিং এবং প্রয়োজনীয়
সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শিতা বা দক্ষতা থাকতে হবে।
৬. সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা: ব্যবসায়ের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং দ্রুত
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।
প্রশিক্ষণের ধরন:
✓ সরকারি এবং বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: সরকারি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান যথা
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বিসিক এসএমই এবং বিভিন্ন এনজিও উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ
প্রদান করে থাকে।
✓ অনলাইন কোর্স: বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম যথা উটেমি কুর সেরা ও গুগল স্কিল সপের মত
প্লাটফর্ম থেকে ব্যবসায়িক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা নেওয়া যায়, বা শেখা যায়।
✓ ইনকিউবেশন সেন্টার: এক্ষেত্রে ইনকিউবেশন সেন্টার এবং বিশ্ববিদ্যালয় নতুন
উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও গাইডলাইন দিয়ে থাকে।
✓ ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান: বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণ
ব্যবসায় পরিচালনা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে থাকে।
বাজার গবেষণা এবং লক্ষ্য নির্ধারণ
সফল আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বাজার গবেষণা এবং লক্ষ্য নির্ধারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কোন বাজারে প্রতিযোগিতা কেমন সঠিক গ্রাহকদের খোঁজ এবং ব্যবসায়ী সাফল্য নিশ্চিত
করতে সাহায্য করে।
১. বাজার গবেষণা (Market Research)
মূলত বাজার গবেষণা হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য
আদর্শ গ্রাহক এবং তাদের চাহিদা ও প্রতিযোগিতা কেমন সেটা বুঝতে পারেন।
কেন বাজার গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ?
বাজারে সম্ভাব্য গ্রাহকদের চাহিদা বোঝার জন্য।
বাজারে বিভিন্ন প্রতিযোগীদের শক্তি এবং দুর্বলতা বোঝার জন্য।
পণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে।
বিপণনের সঠিক কৌশল তৈরিতে। কিভাবে বাজার গবেষণা করবেন:
(ক) প্রাথমিক গবেষণা (Primary Research)
গ্রাহকদের সাথে সরাসরি কথা বলা-সাক্ষাৎকার এবং সারভে এ সময় ফোকাস গ্রুপ ব্যবহার
করুন।
প্রাক বিক্রয় পরীক্ষা-প্রতিক্রিয়া নিন এবং ট্রায়ালের জন্য কিছু পণ্য বা
পরিষেবা করুন।
পর্যবেক্ষণ-বিভিন্ন মাধ্যম পর্যবেক্ষণ যথা অনলাইন ফোরাম স্থানীয় বাজার এবং
সামাজিক মাধ্যম বিশ্লেষণ করা। (খ) গৌণ গবেষণা: (Secondary Research)
সরকারি এবং বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন পড়ুন।
আপনার প্রতিযোগীদের ওয়েবসাইট, রিভিউ, বিজ্ঞাপন, এবং বিচার-বিশ্লেষণ করুন।
২. লক্ষ্য নির্ধারণ (Goal Setting)
একটি সফল ব্যবসায়ী গড়ে তোলার জন্য স্পষ্ট এবং বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ খুবই
গুরুত্বপূর্ণ।
লক্ষ্য নির্ধারণের পদ্ধতি (SMART Goals)
✓S (Specific) - নির্দিষ্ট ভাবে ছয় মাসের মধ্যে ১০০ জন গ্রাহক তৈরি করা।
✓ M (Measurable) - পরিমাপযোগ্য (যেমন জন প্রতি ২০% হারে বিক্রয় বৃদ্ধি করা)
✓A (Achievable) - অর্জনযোগ্য (এক্ষেত্রে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে বাস্তবসম্মত
উপায়ে)
✓R (Relevant) - প্রাসঙ্গিক (একটি ব্যবসায়ের সকল উদ্দেশ্য সমূহের সাথে
সামঞ্জস্যপূর্ণ)
✓ T (Time-bound) - নির্ধারিত সময় (যেমন নির্দিষ্ট একটি সময় অথবা এক বছরের
মধ্যে ব্রেক ইভেন পয়েন্টে পৌঁছানো)
লক্ষ্য নির্ধারণের উদাহরণ:
অন্তত ১০০ জন সম্ভাব্য গ্রাহকের তালিকা তৈরি করতে হবে সেটাও আবার প্রথম তিন মাসের
মধ্যে।
আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ৫০০০ ফলোয়ার তৈরি করা তাও আবার ঠিক প্রথম ছয় মাসের
মধ্যে।
নির্দিষ্ট সময় যেমন এক বছরের মধ্যে ব্যবসার লাভ জনকতা নিশ্চিত করতে হবে। ৩.
বাঁচার গবেষণা এবং লক্ষ্য নির্ধারণের বাস্তব প্রয়োগ:
* বাজার গবেষণার মাধ্যমে গ্রাহকরা ঠিক কোন সমস্যার সমাধান চান সেটি বুঝতে পারবেন।
* গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে আপনার পণ্য বা সেবা উন্নত করুন।
* পরীক্ষামূলকভাবে বিক্রয় কার্য শুরু করুন।
* প্রয়োজনে কৌশল পরিবর্তন করুন।
নেটওয়ার্কিং এবং সম্পর্ক উন্নয়ন
আত্মকর্মসংস্থানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম দিক হলো নেটওয়ার্কিং এবং
সম্পর্ক উন্নয়ন (Networking & Relationship Building). নেটওয়ার্কিং এবং
সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি ব্যবসার প্রসারতা যেমন বৃদ্ধি পায় অন্যদিকে
বিশ্বাসযোগ্যতা ও বৃদ্ধি পায়।
১. নেটওয়ার্কিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
✓নতুন ব্যবসায়িক পার্টনার এবং নতুন গ্রাহক খুঁজে পাওয়া যায়।
✓বাজার
সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যায়।
✓বিক্রয় বৃদ্ধির সাথে সাথে লাভ বৃদ্ধির ও সুযোগ তৈরি করা যায়।
✓ব্যবসায়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা যায়।
২. কিভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন?
(ক) ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক তৈরি
করা:
এক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের পরিচিত ব্যক্তিরা প্রথম
পর্যায়ে আপনার সম্ভাব্য গ্রাহক বা বিনিয়োগকারী হতে পারেন। এজন্য আপনার
পরিবারের সদস্য বন্ধু এবং সহকর্মীদের সাথে সংযোগ বজায় রাখুন।
(খ) পেশাদার নেটওয়ার্কিং:
বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সেমিনার অথবা ইভেন্টে অংশগ্রহণ করুন।
বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তথা চেম্বার অব কমার্স ব্যবসায়িক সংগঠন ও
ক্লাবের সদস্য হন।
সফল উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের সাথে পরিচিত হন এবং সম্পর্ক বজায় রাখুন।
(গ) অনলাইন নেটওয়ার্কিং:
আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনলাইন
নেটওয়ার্কিং অধিক কার্যকরী।
বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের যে সকল ব্যবসায়ী গ্রুপ
আছে তাতে যুক্ত হন।
বিভিন্ন ধরনের ভার্চুয়াল বা ত্রিমাত্রিক ইভেন্টে অংশ
নিন।
ব্যবসায়িক বিভিন্ন ধরনের ব্লগ অথবা ইউটিউবে কার্যকরী উপস্থিতি বজায় রাখুন। ৩.
সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশল:
(ক) পারস্পরিক সহযোগিতা:
নেটওয়ার্কিং অথবা সম্পর্ক উন্নয়ন শুধুমাত্র নিজের জন্য বা নিজের লাভের জন্য
নয় এটি একটি পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বটে যেমন:
আপনি অন্যদের সাহায্য করলে বিনিময়ে আপনিও অন্যদের থেকে সাহায্য পাবেন ।
একে অপরের সাথে বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক তৈরি করুন।
(খ) নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখা
আপনার যারা ব্যবসায়িক পরিচিতি আছে তাদের সাথে সময়মতো যোগাযোগ করুন।
বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ মাধ্যম যথা ইমেইল ফোন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
আন্তরিক বার্তা পাঠান।
শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারেন যথা জন্মদিনের শুভেচ্ছা অথবা যে কোন উৎসবের
শুভেচ্ছা ইত্যাদি। (গ) গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা
আপনার ব্যবসায়ী বা পণ্যে গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দ্রুত সেবা অথবা
আন্তরিক সেবা প্রদান করুন।
গ্রাহকদের মতামত এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনুন আপনার পূর্ণ বাজারজাতকরণে।
পুণ্য ক্রয় বিক্রয়ে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ধরনের অফার বা ছার দিন। ৪.
নেটওয়ার্কিং বা সম্পর্ক উন্নয়নের বাস্তব প্রয়োগ
✓একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনজন
ব্যবসায়িক সংযোগ তৈরি করার লক্ষ্য রাখুন।
✓নির্দিষ্ট সময় অথবা প্রতিমাসে অন্তত একবার একটি ব্যবসায়িক ইভেন্টে অংশ নিন।
✓নতুন গ্রাহক বা পরিচিতজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ
করুন।
প্রযুক্তির ব্যবহার
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আত্মকর্মসংস্থানে জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে উদ্যোক্তারা
তাদের ব্যবসায় খরচ যেমন কম হচ্ছে এবং দ্রুত ও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে
পারছেন। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির দিক তুলে ধরা হলো:
১.
ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ই কমার্স
বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যথা
ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ইউটিউব এমনকি টিকটক এর মাধ্যমেও পণ্যের প্রচারণা করা
হয়।
বিভিন্ন ধরনের ই কমার্স প্লাটফর্ম যথা দারাজ আজকের ডিল ইত্যাদি
ব্যবহার করে ব্যবসার সম্প্রসারণ করা সম্ভব হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
youtube এবং ফেসবুকে SEO এবং Google Ads এর মাধ্যমে অনলাইনে গ্রাহক আকর্ষণ করা
হয়।
২. ফ্রিল্যান্সিং
বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্লাটফর্ম যথা Upwork, Fiver,
Freelancer, Toptal ব্যবহারের মাধ্যমে আউটসোর্সিং কাজ করা হয়।
অনলাইন
প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের কাজ যথা ডিজিটাল স্কিল যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন ওয়েব
ডেভেলপমেন্ট ডিজিটাল মার্কেটিং কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি ক্যারিয়ার হিসেবে করা
যায়।৩. মোবাইল অ্যাপ অথবা সফটওয়্যার ব্যবহার
মোবাইল ফোনে Pos সফটওয়্যার
মাধ্যমে দোকানে যাবতীয় হিসাব রাখা যায়।
বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার
সিস্টেম যথা স্টক ম্যানেজমেন্ট ও অটোমেশন টুল ব্যবহার করে সময় এবং খরচ
স্বাস্থ্রই করা হয়।
গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাস্টমার
ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।
৪. ডিজিটাল পেমেন্ট ও ফিনান্সিং
টাকা
উত্তোলনের বিভিন্ন ধরনের মাধ্যম যথা বিকাশ নগদ এবং রকেটের মাধ্যমে লেনদেনে
সহজীকরণ।
ক্রাউড ফান্ডিং এবং অনলাইন এর বিভিন্ন প্লাটফর্মের ব্যবহারের ফলে
মূলধন সংগ্রহ করা যায়।
সৃষ্ট চিন্তা এবং সৃজনশীলতা
মূলত আত্মকর্মসংস্থান বা (Self-employment) এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে মানুষের
সৃজনশীল চিন্তাধারা উন্নত এবং নতুনত্ব কিছু করার ইচ্ছা প্রকাশ পায়। একজন
উদ্যোক্তা তার সঠিক সৃজনশীল চিন্তাগুলিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সফল
আত্মকর্মসংস্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
আত্ম কর্মসংস্থানে
সৃষ্ট চিন্তা এবং গুরুত্ব
১. নতুন উদ্ভাবনী আইডিয়া: এ থেকে প্রথমত আমরা
বলতে পারি যে আত্মকর্মসংস্থান সফল করতে নতুন এবং উদ্ভাবনী আইডিয়া আবিষ্কার করা
খুবই প্রয়োজন যেমন বাজারের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনার মাধ্যমে ভোক্তা দেহের
চাহিদা বুঝে নতুন পণ্য বা পরিষেবা তৈরি করা।
২. সমস্যা সমাধান: এ ক্ষেত্রে
একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে নানা-বিদ সমস্যা হতে পারে সেগুলি
সৃজনশীল চিন্তার মাধ্যমে সমাধান সহজ হয়।
৩. বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে
থাকা: মূলত একজন উদ্যোক্তাকে বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য গ্রাহকদের
বিভিন্ন দিক বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে ব্যবসায় উন্নত সেবা ও পণ্য পরিবহন ও
পরিষেবা করতে হবে।
সৃজনশীলতা
সৃজনশীল চিন্তাধারার
মাধ্যমে নতুন ব্যবসায়ী কাঠামো বা ধারণা তৈরি করা।
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে
নিজেদের ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিং এর ওপর নতুনত্ব সৃষ্টি করা।
বিভিন্ন
ধরনের ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসায়ী সম্প্রসারণ এবং পরিচালনা
করা।
ব্যবসায়িক পণ্য উন্নত করনের মাধ্যমে গ্রাহক সন্তুষ্টি বা ক্রেতা
সন্তুষ্টি অর্জন করা।
আর্থিক ব্যবস্থাপনা
আত্মকর্মসংস্থানে আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রধানত কয়েকটি ধাপসমূহ আলোচনা করা
হলো:
১. মূলধন ব্যবস্থাপনা: এক্ষেত্রে একজন উদ্যোক্তার নিজের সত্তা
এবং বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করা জরুরী। আবার বিভিন্ন ধরনের আর্থিক
প্রতিষ্ঠান থেকে তহবিল সংগ্রহ করা দরকার। আবার বলা যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের
ক্ষেত্রে উদ্যোক্তার বিনিয়োগের পরিমাণ এবং ব্যয়ের পরিমাণ বাজেট তৈরি করতে
হবে।
২. বাজেট পরিকল্পনা: এখানে ব্যবসায়ীর আয় ব্যয় হিসাব রাখার
সাথে সাথে মাসিক এবং বাৎসরিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবসায়ের বাজেট তৈরি করতে
হবে।
৩. নগদ অর্থ প্রবাহ: এক্ষেত্রে প্রতিদিনের হিসাব প্রতিদিন
লিপিবদ্ধ করা এবং লভ্যাংশ ও মূলধনের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করা।
৪.
লাভ ক্ষতি বিশ্লেষণ: ব্যবসায়ী কোন খাত থেকে কেমন লাভ হচ্ছে বা ক্ষতি হচ্ছে তা
নির্ধারণের পাশাপাশি মাসিক এবং বার্ষিক আয়ের পর্যালোচনা নিশ্চিত করা।
৫.
ঋণ ব্যবস্থাপনা: এক্ষেত্রে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে রোহিং নেওয়ার আগে
ঋণ পরিশোধ শর্তাবলী যাচাই-বাছাই করা। আবার একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর
কিস্তি পরিশোধ করা জরুরি।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
ঝুঁকি এমন একটি প্রক্রিয়া যা প্রতিটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেই পরিমাপ করা হয়।
এক্ষেত্রে ব্যবসা বা উদ্যোগের মতোই আত্মকর্মসংস্থানেও ঝুঁকি পরিলক্ষিত হয়। এ
থেকে আত্মকর্মসংস্থানের সম্ভাব্য ঝুঁকি গুলো হলো:
আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:
ব্যবসায়ের মূলধন সংকট দেখা দেওয়া।
অনেকাংশে
ব্যবসায়ী লোকসান বা ক্ষতি সৃষ্টি হওয়া।
ব্যবসায়ের ঋণের পরিমাণ বা বোঝা
বেড়ে যাওয়া।২. বাজার প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত ঝুঁকি:
এক্ষেত্রে
প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে টিকে থাকা অনেক কঠিন।
পণ্য গ্রাহকদের চাহিদা
তুলনাই সরবরাহ বেশি হলে পণ্যের মান এবং ব্র্যান্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।৩.
প্রযুক্তিগত ঝুঁকি:
অনেক সময় প্রযুক্তির সাথে তাল না মিলাতে পারা।
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে
ডিসিটালাইজেশন না নিশ্চিত করা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ই-কমার্স বা
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার যথাযথভাবে না করা।৪. আইনি ঝুঁকি
ব্যবসায়
সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র দিয়ে যথা লাইসেন্স না থাকার কর সংক্রান্ত
এবং চুক্তি বা যেকোনো আইনি সমস্যা দেখা দেওয়া।
ব্যবস্থাপনা:
ওপরে
উল্লিখিত সমস্যা গুলি থেকে সমাধানের জন্য যথাসময়ে সৃজনশীল চিন্তাধারার মাধ্যমে
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে উক্ত ঝুঁকি পরিমাপ করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া অতীব জরুরি
এক্ষেত্রে যেমন ব্যবসায়ী ঝুঁকি পরিমাপ কম হবে সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ের লাভ
বৃদ্ধি পাবে।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
সাধারণত এই বিষয়ের উপর নির্ভর করে যে একজন ব্যক্তি কিভাবে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারে, এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উন্নতির জন্যই নয় বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আত্মকর্মসংস্থান ব্যক্তিকে স্বাধীনতা দেয়। এটি সাধারণত কোন চাকরির ওপর নির্ভর করে না একটি ব্যক্তিগত ব্যবসা অথবা (flancing) ও কৃষি কাজ ছোট ছোট উদ্যোগ নিজেই অর্থ উপার্জন করা কেই আত্মকর্ম বলে।
আশিক টেক আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটা কমেন্টে রিভিউ করা হয় নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url