ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি

 শীতকালে সূযের আলো আমাদের যেভাবে সাহায্য - সূযের আলোর উপকারিতা ও অপকারিতা

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লোন পদ্ধতি

পরিচিতি

ইসলামী ব্যাংক মূলত অর্থনৈতিক ব্যাংক। এখানে লেনদেনের সুধীনা আদর্শ নীতি অনুসরণ করা হয়। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংকগুলি সারিয়া আইন মোতাবেক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং সুদ থেকে বিরত থাকে।

ইসলামী ব্যাংক লোনের নীতি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড একটি ব্যাংক যা ইসলামী অর্থনৈতিক নীতির উপর ভিত্তি করে তাদের ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে। সাধারণত মুছারকা, মুরাবাহা, ইজারা, ইস্টিসনা নমুওরাহ  ইসলামী অর্থনৈতিক পদ্ধতির উপর নির্ভর , যা সুদ (রিবাথেকে মুক্ত।
1.মুরাবাহা 
উক্ত পদ্ধতির ব্যাংক গ্রাহককে পণ্য সেবা ক্রয়ের জন্য অর্থ প্রদান করে এবং গ্রাহককে তা পড়ে নির্ধারিত একটি মূল্য দিয়ে পরিশোধ করতে হয়। এখানে সুদ ব্যবহৃত হয় না, কিন্তু ব্যাংক তার লাভ নির্ধারণ করে এবং পরিশেষে গ্রাহক তা পরিশোধ করে
2. মুছারকা:
উক্ত পদ্ধতিতে ব্যাংক গ্রাহক যৌথ প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে। এখানে ব্যাংক গ্রাহক উভয়ই মূলধন প্রদান করে অন্যথায় লাভ বা ক্ষতি উভয় পক্ষের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়।
3.ইজারা:
উল্লিখিত পদ্ধতিতে ব্যাংক সম্পদ ক্রয় করে এবং গ্রাহককে ভাড়া দেয়। ব্যাংক ভাড়া গ্রহণের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময় পর উক্ত সম্পত্তি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে পারে।
4. ইস্টিসনা:
উক্ত লোন পদ্ধতি একটি উৎপাদন নির্মাণ সম্পর্কিত লোন পদ্ধতি। এখানে ব্যাংক কোন পূর্ণ বাসে বা উৎপাদনের জন্য অর্থ প্রদান করে থাকে এবং পরিশেষে তা পরিষদের সময় নির্ধারণ করে থাকে।
5. নমুওরাহ:
উল্লিখিত পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবা ব্যবহারের জন্য ব্যাংক গ্রাহককে একটি বিশেষ ধরনের ক্রেডিট সুবিধা দিয়ে থাকে।

বিনিয়োগ

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড একটি সুদহীন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান যা শরিয়া অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এমনকি সরিয়া অনুসারে বৈধ বিনিয়োগ ও সঞ্চয় স্কিম গ্রহণ ও প্রদান করে থাকে। নিম্নে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগের কিছু সাধারণ উদাহরণ হলো:

1. মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব: এখানে গ্রাহক এবং ব্যাংক একসাথে মুনাফা ভাগ করে সঞ্চয় করে রাখে।

2. মুশারাকা বিনিয়োগ: এটি একটি অংশীদারী ভিত্তিক বিনিয়োগ পদ্ধতি, যেখানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে একটি নির্দিষ্ট প্রকল্প নির্বাচন করে এবং সেখানে বিনিয়োগ করে ও মুনাফা ভাগ করে।

3. ইজারা ফাইন্যান্সিং: উল্লেখিত পদ্ধতিতে ব্যাংক কোন সম্পত্তি ও যন্ত্রপাতি লীজ প্রদান করে থাকে এবং গ্রাহক সেই লীজের জন্য মাসিক বা একটি নির্দিষ্ট সময় পর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে থাকে।

4. আল-মুরাবাহা (ক্রেডিট সেলস): উক্ত পদ্ধতিতে ব্যাংক পণ্য বা সেবা বিক্রি করার মাধ্যমে গ্রাহককে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্য পরিশোধ করতে দেয়।

5. মুদারাবা ও মুশারাকা লোন: মুদারাবা ও মুশারাকা হল শরিয়া ভিত্তিক প্রাথমিক ঋণ। এখানে ব্যাংক ও গ্রাহক উভয় পক্ষই বিনিয়োগ করে এবং লাভ-লোকশান ভাগাভাগি করে নেয়।






উদ্যোক্তা বিনিয়োগ

ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা বিনিয়োগের সহায়তা করে। উল্লিখিত ব্যাংকটি বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও সুবিধার মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা তৈরি করে থাকে।
1. ব্যবসা উদ্যোক্তা ঋণ:
নতুন ব্যবসা শুরু কিংবা বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ঋণ প্রদান করে থাকে। সাধারণত ইসলামী ব্যাংকিং নীতি অনুসরণ করে এ ঋণ প্রদান করা হয় যা সুদ মুক্ত।
2. ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগ:
ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য বিশেষ এক ধরনের ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়, যাতে করে উদ্যোগ তারা তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং সম্প্রসারণ করতে পারে।
3. এনআরবি প্রোডাক্টস:
যেসব ব্যক্তি বিদেশে বসবাস করে কিন্তু বাংলাদেশি, তারা যাতে করে দেশে ব্যবসা শুরু করতে পারে এজন্য প্রোডাক্ট প্রদান করা হয়ে থাকে।
আবেদন এবং কাগজপত্র
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড একটি ব্যাংক যা ইসলামিক শরীয়া অনুযায়ী পরিচালিত হয়। ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ লোন সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। নিচে বিনিয়োগ সুবিধা আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. বিনিয়োগের ধরন সমূহ:
বাসা নির্মাণ বিনিয়োগ: নতুন বাড়ি তৈরি অথবা পুরাতন বাড়ির সংস্থার করার জন্য ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বিনিয়োগ লোন দিয়ে থাকে।
উদ্যোক্তা বিনিয়োগ: নতুন ব্যবসায়ী শুরু এবং পুরাতন ব্যবসায় আছে সে ক্ষেত্রে তার সম্প্রসারণের জন্য লোন প্রদান করা হয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং বিনিয়োগ: যারা সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং করেন তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণের জন্য লোন প্রদান করা হয়।
কৃষি বিনিয়োগ: সাধারণত কৃষি কার্যক্রমের উন্নতির জন্য লোন দেওয়া হয়।

২. সাধারণ যোগ্যতা: 
লোন আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর অবশ্যই হতে হবে।
বাংলাদেশের নাগরিক তার উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এ একটি কার্যকরী একাউন্ট থাকতে হবে।

৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র: জাতীয় পরিচয় পত্র তথা এন আই ডি, অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকতে হবে।

আয়ের প্রমাণ পত্র:
যারা চাকরিজীবী তাদের জন্য চাকরির সনদ এবং বেতনের স্লিপ থাকতে হবে এবং যারা ব্যবসায়ী করেন তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স এবং আর্থিক বিবরণে প্রস্তুত রাখতে হবে বা এর কপি রাখতে হবে।

৪. আবেদন প্রক্রিয়া:
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করতে হবে।
  • অনলাইন অথবা সরাসরি ব্যাংকের নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।
  • ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন মূল্যায়নের মাধ্যমে অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পাদন করে বিনিয়োগ প্রদান করবেন।

লোন পরিশোধের নিয়ম 

আই বি বি এল অর্থাৎ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড তার গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের লোন সুবিধা প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে হোম লোন, উদ্যোক্তা লোন, বাণিজ্য লোন, কৃষি লোন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য বিশেষ। ঋণের পরিশোধ পদ্ধতি সাধারণত ঋণের ধরন এবং পরিমাণের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। নিচে ঋণ পরিশোধের নিম্নলিখিত পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হলো:

১. মাসিক কিস্তি পরিশোধ: প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি অর্থ ব্যাংকে পরিশোধ করতে হয় যা ঋণের পরিমাণ এবং তার মেয়াদের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় বাড়ি নির্মাণের জন্য ১০ বছরের মেয়াদে মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যায়।

২. এককালীন পরিশোধ: অনেক গ্রাহক আছেন যারা এককালীন ঋণের অর্থ পরিশোধ করে থাকে। এটা সাধারণত ঋণের শর্তাবলির ওপর এটা নির্ভর করে।

৩. অনলাইন ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং: কিছু গ্রাহক আছে যারা অনলাইন ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ঋণের অর্থ পরিশোধ করে থাকে।

৪. ডেবিট ব্যবস্থা: অনেক গ্রাহক তাদের সঞ্চয়ী বা চলতি হিসাব একটি নির্দিষ্ট সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিস্তি পরিশোধ করে।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেড (IBBL) তার গাহকদের বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সেবা প্রদান করে থাকে যার মাধ্যমে অন্যতম হলো লোন বারিম প্রদানের পদ্ধতি ইসলামী ব্যাংক তার সুনির্দিষ্ট শরীআহ ভিত্তিক অনুসরণ করে ঋণ প্রদান করে ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতিতে ব্যাংক সাধারণত মুদারাবা, মোশারাকা, ইজারা,মরবাহা মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকে শরীয়ত ভিত্তি লোন পাওয়া যায়।

শেষ মন্তব্য হিসেবে বলা যায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড গ্রাহকের জন্য নিরাপদ শরীয়ত ভিত্তিক প্রদান করে থাকে যা তাদের আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে এবং ইসলামে অর্থনীতি ভিত্তিক মাধ্যমে ঋণ প্রদান করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আশিক টেক আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটা কমেন্টে রিভিউ করা হয় নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url